Music box

শুক্রবার, ২৯ জুন, ২০১২

যেসব কারণে বার্ধক্য দ্রুত আসে...





বার্ধক্য


কত বয়স অতিক্রম করলে একজন ব্যক্তি বৃদ্ধ বিবেচিত হবেন তার ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। বিভিন্ন দেশে অবসর নেওয়ার বয়সকে (৬০ থেকে ৬৫ বছর) বার্ধক্যের শুরু মনে করা হয়। কিন্তু যে সময় থেকে একজন মানুষ ব্যক্তি ও সমাজ-জীবনে সক্রিয় অবদান রাখতে পারে না, মূলত তখন থেকেই 'বার্ধক্য'র শুরু হয়। আবার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যখন এ শরীরটির নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করার সক্ষমতা লোপ পায় এবং বিভিন্ন রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে, ধরে নিতে হবে আমরা বার্ধক্যে পৌঁছে গেছি। তাই বার্ধক্যে পৌঁছানোর বয়স জনে জনে ভিন্ন হতে পারে।

বয়সজনিত শারীরিক পরিবর্তন
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শরীরে পরিবর্তন ঘটতে থাকে। ২৫ বছর বয়সে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের যে কার্যক্ষমতা থাকে, ৭০ বছর বয়সে তাদের সক্ষমতা প্রায় ৫০ শতাংশ হ্রাস পায়। হৃৎপিণ্ডের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা হ্রাস পায়, রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং চর্বি জমে রক্তনালি সংকুচিত হতে থাকে। ফুসফুসের গ্যাস পরিবহন এবং বিনিময়ে বিঘ্ন ঘটে। কিডনির রক্ত পরিশোধন করার ক্ষমতা কমে আসে। পরিপাকতন্ত্রের কোষকলার অবলুপ্তি ঘটতে থাকে, হজমের গতি কমে যায়, খাদ্যের পরিপাকে বিঘ্ন ঘটে। শরীর খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না। শরীরে উৎপন্ন বিষাক্ত পদার্থ এবং ওষুধ বিপাক করার ক্ষমতা যকৃতের হ্রাস পায়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এবং আরো বহুবিধ কারণে রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকে। অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের ক্ষয়রোগ দেখা দেয়। বয়সের কারণে কোলাজেন টিস্যুর পরিবর্তন হয়। ফলে ত্বকের মসৃণতা এবং স্থিতিস্থাপকতা কমে যায়। গলার স্বর পরিবর্তন হয়, কানে শুনতে সমস্যা হয়, চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। মাংসপেশি এবং জয়েন্টগুলোতে কোষের ক্ষয়ের ফলে শরীরের ওজন কমে যায় এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, হাঁটাচলার শক্তি কমে যায়। মানসিক শক্তি এবং চিন্তাভাবনার সক্ষমতা কমে আসে, মনমেজাজ রুক্ষ হয়ে যায়। ব্যবহারে পরিবর্তন আসে। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, সাধারণভাবে ব্যবহৃত ওষুধের প্রতিক্রিয়াও পরিবর্তন হয়ে যায়। এই পরিবর্তনগুলো বয়স্ক রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ভিন্নতা নিয়ে আসে।

যেসব কারণে বার্ধক্য দ্রুত আসে
* খাবার গ্রহণে অনিয়ম। কোমল পানীয়, চর্বিযুক্ত খাবার এবং মিষ্টি-মিঠাই বেশি খাওয়া। খাদ্যতালিকা থেকে ফল ও শাকসবজি কমিয়ে দেওয়া।
* কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম না করা।
* কাজকর্মে এবং ঘরে-বাইরে খুব বেশি চাপে থাকলে শরীরের ক্ষতি হয়। এতে রক্তে স্ট্রেস হরমোন, কটিসোল ও নরইপিনেফ্রিনের পরিমাণ বাড়ে, রক্তচাপ বাড়ে, রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে যায়। ফলে বার্ধক্য দ্রুত আসে।
* ঘুমের সমস্যা বা অপর্যাপ্ত ঘুম।
* ধূমপান করলে এবং কড়া রোদে বেশিক্ষণ ঘোরাঘুরি করলে।
* উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, শরীরের বাড়তি ওজন।