রোগের প্রতিষেধক করলা

কিউকারবিটাসিন নামক একটি দ্রব্যের উপস্থিতির জন্য করলার স্বাদ হয় তিতা। এই সবজিটির রয়েছে রোগ প্রতিরোধ এবং রোগ নিরাময়ের অসাধারণ ক্ষমতা। এশিয়ায় হাজার বছর ধরে ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এটি। দক্ষিণ আমেরিকার আমাজনের আদিবাসীরাও অনেক বছর ধরেই করলাকে ডায়াবেটিস, পেটের গ্যাস, হাম ও হেপাটাইটিসের ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। ব্যবহার করে আসছে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে, ম্যালেরিয়া জ্বরে এবং মাথাব্যথায়ও।
পুষ্টিমানের দিক থেকেও করলা উৎকৃষ্ট সবজি। করলায় আয়রনের পরিমাণ বেগুন, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপির চেয়ে বেশি এবং এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন-এ, সি এবং আঁশ। ভিটামিন-এ ও সি অ্যান্টি অঙ্েিডন্ট; বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখে, শরীরের কোষগুলোকে রক্ষা করে। এতে আরো রয়েছে লুটিন আর লাইকোপিন। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। খনিজ এবং ভিটামিনের অভাবজনিত সমস্যা সমাধানে তাই করলা অত্যন্ত উপকারী।
করলা ইনসুলিন রেজিস্টেন্স কমায়। এটি রক্ত থেকে শরীরের কোষগুলোর সুগার গ্রহণের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। শরীরের কোষের ভেতর গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়াও বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তের সুগার কমে যায়। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য করলা ভালো। প্রতিদিন নিয়মিতভাবে করলার রস খেলে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
করলা আরো যেসব উপকার করে-
* অ্যালার্জি প্রতিরোধে নিয়মিত করলার রস খেলে উপকার পাওয়া যায়।
* বাতের ব্যথায় নিয়মিত করলার রস খেলে ব্যথা কমে।
* আয়ুর্বেদের মতে করলা কৃমিনাশক, কফনাশক ও পিত্তনাশক।
* চর্মরোগেও করলা উপকারী।
* জন্ডিস ও লিভারের অসুখে খাবারে অরুচি দেখা দিলে করলা খেলে রুচি বাড়ে।
* করলার ল্যাক্সেটিভ পায়খানাকে নরম রাখে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
* করলা জীবাণুনাশী, বিশেষ করে ই-কোলাই নামক জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর।
* ক্যান্সাররোধী লিভার ক্যান্সার, লিউকোমিয়া, মেলানোমা ইত্যাদি প্রতিরোধ করে।
* করলা হেপাটাইটিস-এ, হারপিস ভাইরাস, ফ্লু ইত্যাদির বিরুদ্ধে কার্যকর।
* রক্তের চর্বি তথা ট্রাইগ্লিসারাইড কমায়; কিন্তু ভালো কোলস্টেরল এইচডিএল বাড়ায়। তাই রক্তচাপ কমাতে করলা কাজে দেয়।
আরহাম চৌধুরী, পুষ্টিবিদ।